যাচাই-বাছাইয়ের নামে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের হেনস্তা করার অভিযোগ

যাচাই-বাছাইয়ের নামে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের হেনস্তা করার অভিযোগ


যাচাই-বাছাইয়ের নামে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মানিত করার অভিযোগ করা হয়েছে। বরিশালে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, লাল বই, মুক্তিবার্তা, ভারতীয় তালিকা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষিত তালিকায় নাম থাকার পরও বরিশালের অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম মুক্তিযোদ্ধাদের মূল তালিকা থেকে বাদ দিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের যাচাই-বাছাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এতে অপমানিত বিব্রত এবং ক্ষুব্ধ ৭১ এর রনাঙ্গনের সূর্য সন্তানরা। 

শনিবার বেলা ১১টায় বরিশাল নগরীর ফকির বাড়ি রোডে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার চক্রবর্তী। 

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অবহেলা এবং দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয়। ওই সময় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই তালিকায় বরিশাল জেলায় যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে ৫ নম্বর ক্রমিকে রয়েছেন তিনি (শহীদ সুধীর কুমার চক্রবর্তীর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার চক্রবর্তী), ২৬ নম্বরে জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ৬৯ সালের গণআন্দোলনে বরিশাল সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ও ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি খান আলতাফ হোসেন ভুলু, ১২ নম্বরে প্রয়াত সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিন্টু বসু এবং ১৭০ নম্বর তালিকায় তরুন দেবসহ অনেকের নাম।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের যাচাই-বাছাই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যেসব গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম লাল বই, মুক্তিবার্তা, ভারতীয় তালিকা বা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষিত ৩৩টি প্রমাণকের ১টিতেও থাকবে তারা এই যাচাই-বাছাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে না। 

তপন কুমার চক্রবর্তী ভারতের বিহারে ট্রেনিং করে ৯ নম্বর সেক্টরে মেজর জলিলের অধীনে সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। লাল বইতে তার নাম আছে। এছাড়া জেনারেল ওসমানী সাক্ষরিত দেশরক্ষা সংগ্রামের সনদ, বেসামরিক গেজেট এবং মন্ত্রণালয়ের সাময়িক সনদপত্র রয়েছে তার। অথচ তার নাম যাচাই-বাছাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে তাকে অপমানিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। 
একইভাবে ৬৯ সালের গণআন্দোলনে বরিশাল সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি, স্বাধীন বাংলা ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সদস্য ও ব্রজমোহন কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি খান আলতাফ হোসেন ভুলুসহ বরিশালের অনেকের নাম রয়েছে যাচাই-বাছাই তালিকায়। যাদের সামনে ডেকে তাদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করা হয়, তাদের অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা নয়। অথচ তাদের সামনে সাক্ষাতকারের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের ডেকে অপমানিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তপন চক্রবর্তীর মেয়ে জেলা বাসদের সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী।  

সংবাদ সম্মেলনে যাচাই-বাছাইয়ের নামে অবিলম্বে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের হয়রানী এবং অপমান বন্ধ করার দাবি জানান স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য খান আলতাফ হোসেন ভুলু।